রবিবার, ১২ জানুয়ারী ২০২৫, ০৪:৩৯ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক, সুনামগঞ্জ: পবিত্র ঈদুল ফিতরের ছুটিতে সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওরের ভ্রমণে এসে বুধবার বিকেলে লাশ হয়ে ফিরলেন সিলেট এসসি কলেজের এক শিক্ষার্থী। নিহতের নাম মোঃ হাসান মিয়া (২৩)। তিনি জেলার ধর্মপাশা উপজেলার মাটিকাঁটা গ্রামের চাঁন মিয়ার ছেলে এবং বর্তমানে সুনামগঞ্জ পৌর শহরের হাজিপাড়ার বাসিন্দা। হাসান সিলেট এসসি কলেজে থেকে চলতি বছর ভুটানিতে মাস্টার্স ফাইনাল পরীক্ষা দিয়েছে।
এদিকে নিহত হাসানের মৃত্যু ও ঘটনার সময় সম্পর্কে সহপাঠিদের দেয়া বক্তব্য এবং কর্তব্যরত চিকিৎসকের বক্তব্য নিয়ে নানা ধুর্মজাল ও সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছে। কলেজ ছাত্র হাসানের মৃত্যুর কারণ ও সময় সম্পর্কে থানা পুলিশও বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত নিশ্চিত হতে পারেন নি।
নিহতের সহপাঠি সুনামগঞ্জ সদরের অচিন্তপুরের বাসিন্দা সিলেট এমসি কলেজের শিক্ষার্থী রাফিজুল ইসলাম এবং তাহিরপুরের আরেক সহপাঠি ইয়াসির আরাফাত তপু বুধবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে জানান, ঈদুল ফিতরের ছুটিতে কলেজ ও বিশ^বিদ্যালয়ে পড়–য়া হাসানসহ ১৯ জন সহপাঠি মিলে টাঙ্গুয়ার হাওর, টেকেরঘাট চুনাপাথর খনি প্রকল্প ও বারেক টিলায় ভ্রমণের জন্য মঙ্গলবার দুপুরের দিকে ট্রলার ভাড়া করে ভ্রমণে বের হন। সুনামগঞ্জ শহরের হাজিপাড়ার বাসা থেকে হাসান ও অচিন্তপুর গ্রামের বাড়ি থেকে রাফিজুল এবং অপর ১৭ সহপাঠির সঙ্গে মঙ্গলবার তাহিরপুর সদরে এসে ভ্রমণে যোগ দেন।
অন্যদিকে ট্যাকেরঘাট চুনাপাথর খনি প্রকল্পের ঘাটে রাত্রীযাপন শেষে বুধবার বেলা ২টার দিকে রামসার প্রকল্পভুক্ত টাঙ্গুয়ার হাওরের ফের সবাই নৌ ভ্রমণে গিয়ে হাওরের ওয়াচ টাউয়ারের নিকট ট্রলার রেখে সবাই গোসল করতে নেমে প্রায় ঘণ্টাখানেক পর সহপাঠিরা ট্রলারে উঠে আসেন তাহিরপুর উপজেলা সদরে ফিরে আসার জন্য। ট্রলারটি ওয়াচ টাওয়ার ছেড়ে কিছু দূর আসার পর সহপাঠিরা দেখেন ট্রলারের ছইয়া (ছাঁদ) ও নীচে হাসান নেই। ট্রলার নিয়ে ঘাটে ফিরে এসে সহাপাঠিরা হাসানকে পানি থেকে ডুবন্ত অবস্থায় তুলে নিয়ে বিকেল ৪টার দিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন।
তাহিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ মীর্জা রিয়াদ হাসান বুধবার সন্ধ্যায় জানান, হাসানকে হাসপাতালে নিয়ে আসার পূর্বেই অনুমান বুধবার সকালে দিকেই মৃত্যুবরণ করেছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে পানিতে ডুবেই হয়ত হাসানের মৃত্যু হয়েছে, আর অন্য কোন কারণ থাকলে তা ময়না তদন্তেই বেড়িয়ে আসবে।
তাহিরপুর থানার কর্তব্যরত এসআই বিপুল কুমার সিনহা বুধবার সন্ধ্যায় বলেন, আপাতত লাশ ময়না তদন্তের জন্য জেলা সদর মর্গে প্রেরণ করা হচ্ছে।
তাহিরপুর থানার ওসি শ্রী নন্দন কান্তি ধর বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় বলেন, নিহত হাসানের পিতা-মাতাকে সংবাদ দেয়া হয়েছে, তারা এখনো (০৬.৩০) মিনিট পর্যন্ত থানায় এসে পৌছান নি, তারা আসলেই সিদ্ধান্ত নেয়া হবে লাশ মর্গে পাঠানো হবে কী না? মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আপাতত সহপাঠিদের বক্তব্য অনুযায়ি প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে পানিতে ডুবেই হয়ত হাসানের মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে। এছাড়াও অন্যান্য সম্ভাব্য কারণ সম্পর্কেও খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে বলেও জানান।